বর্তমান যুগে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার অন্যতম কার্যকর উপায় হলো সময়মতো টিকা গ্রহণ করা। বিশেষ করে টাইফয়েড জ্বর একটি মারাত্মক ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ, যা দূষিত খাবার ও পানির মাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তাই টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকা গ্রহণ অত্যন্ত জরুরি। আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে এখন আর টিকা গ্রহণের জন্য দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন হয় না। সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগ অনলাইনের মাধ্যমে টাইফয়েড টিকার আবেদন করার সুবিধা চালু করেছে, যার ফলে মানুষ সহজে ঘরে বসেই আবেদন করতে পারছেন।
টাইফয়েড টিকার গুরুত্ব এবং উপকারিতা
টাইফয়েড এমন একটি রোগ, যা দ্রুত শরীরে সংক্রমণ ঘটায় এবং চিকিৎসা না করলে গুরুতর জটিলতা তৈরি হতে পারে। টিকা নেওয়ার মাধ্যমে শরীরে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়, ফলে টাইফয়েডের ঝুঁকি অনেক কমে যায়। বিশেষ করে শিশু, কিশোর এবং যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের জন্য এই টিকা অত্যন্ত জরুরি। এছাড়াও যারা নিয়মিত ভ্রমণ করেন বা দূষিত পানি ও খাবারের ঝুঁকিতে থাকেন, তাদেরও অবশ্যই টাইফয়েড টিকা গ্রহণ করা উচিত।
অনলাইনে টাইফয়েড টিকার জন্য আবেদন করার ধাপসমূহ
অনলাইনে টাইফয়েড টিকার জন্য আবেদন করা অনেক সহজ এবং সবার জন্য উন্মুক্ত। আবেদন করতে হলে প্রথমে স্বাস্থ্য বিভাগের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অথবা স্বাস্থ্য সেবা সম্পর্কিত পোর্টালে প্রবেশ করতে হবে। সেখানে “টিকা সেবা” বা “ভ্যাকসিন রেজিস্ট্রেশন” অপশন পাওয়া যাবে।
এরপর জাতীয় পরিচয়পত্র (NID), জন্মসনদ বা পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে হয়। নিবন্ধনের সময় ব্যক্তিগত তথ্য যেমন নাম, বয়স, মোবাইল নম্বর, ঠিকানা ইত্যাদি দিতে হয়। তথ্য যাচাই শেষে একটি নিশ্চিতকরণ এসএমএস আসে, যেখানে নির্দিষ্ট তারিখ ও টিকা দেওয়ার কেন্দ্রের নাম উল্লেখ থাকে। নির্ধারিত দিনে টিকা কেন্দ্রে গিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র ও এসএমএস দেখিয়ে টিকা গ্রহণ করা যায়।
টাইফয়েড টিকা নেওয়ার আগে যা জানা জরুরি
টিকা নেওয়ার আগে শরীরে কোনো বড় ধরনের অসুস্থতা থাকলে তা চিকিৎসককে জানানো জরুরি। এছাড়াও, যদি কেউ পূর্বে কোনো টিকা গ্রহণে অ্যালার্জি বা জটিল প্রতিক্রিয়া অনুভব করে থাকেন, তবে তা রেজিস্ট্রেশনের সময় উল্লেখ করা উচিত। টিকা গ্রহণের পর সাধারণত সামান্য ব্যথা, জ্বর বা ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে, যা স্বাভাবিক এবং কয়েক দিনের মধ্যেই সেরে যায়।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, নির্ধারিত তারিখে সময়মতো টিকা নেওয়া এবং টিকার সার্টিফিকেট সংরক্ষণ করা। ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে এই সনদ ভ্রমণ বা চিকিৎসার কাজে লাগতে পারে।
টাইফয়েড একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ, তবে সচেতনতার অভাবে অনেক মানুষ এর ঝুঁকিতে পড়ে যান। অনলাইনে টাইফয়েড টিকার আবেদন করার সুযোগ থাকায় এখন আর টিকা নেওয়া জটিল নয়। মাত্র কয়েকটি ধাপে নিবন্ধন করে নির্ধারিত সময়ে টিকা নেওয়া সম্ভব। তাই নিজে টিকা গ্রহণ করুন এবং পরিবার-পরিজনকেও টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করুন। সচেতনতা ও সময়মতো টিকা গ্রহণই পারে আমাদের সবাইকে টাইফয়েডের ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে।